হিন্দু সধবা মহিলারা শাঁখা সিদুর না পরলে কি হয় ? জানুন

17
হিন্দু সধবা মহিলারা শাঁখা সিদুর না পরলে কি হয় ? জানুন

হিন্দু ঘরের এয়োস্ত্রী মানেই হাতে শাঁখা-পলা-লোহার অলংকার, সিঁথিতে সিঁদুর এবং পায়ে আলতা থাকতে বাধ্য। তবে আধুনিক যুগে এই রীতিতে অনেকখানি পরিবর্তন এসেছে। তবুও সনাতন হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীরা এখনো শাখা-পলার কদর বোঝেন। এ শুধু রীতি নয়। স্ত্রীলোকের কাছে এক অন্যতম আবেগের বস্তু, বিবাহিতার শৃঙ্গার। তাই তথাকথিত আধুনিক সভ্যতাতেও শাঁখা-পলা-সিঁদুর স্ত্রীলোকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম উপাদান হিসেবে সমানভাবে গ্রহণীয়।

কিন্তু কিভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বী স্ত্রীলোকের জীবনে শাঁখা পরিধানের প্রচলন হলো, তা জানতে হলে অবশ্যই পুরাণে চোখ বোলাতে হবে। পুরাণের বর্ণনা অনুসারে সংসারে শাঁখার প্রচলনের উপর বেশ সুন্দর একটি কাহিনী রয়েছে। একদা দেবলোকে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন সকল দেব এবং দেবী। আমন্ত্রিতদের মধ্যে শিব-পার্বতীও ছিলেন।

শিব বরাবরই আত্মভোলা, শ্মশানচারী, গাঁজার নেশায় বুদ হয়ে থাকেন। সংসারের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি তার কোনো দৃষ্টিই নেই। দেবলোকের প্রতিটি স্ত্রীলোক অনুষ্ঠানে যথাসম্ভব রত্নালঙ্কারে ভূষিতা হয়ে উপস্থিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এদিকে দেবী পার্বতীর কাছে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার মতো কোনো বিশেষ অলংকার-আভরণ নেই। দেবীর এহেন পরিস্থিতিতে মহাদেব পড়লেন মহা বিপাকে। অলঙ্কারে ভূষিতা স্ত্রীলোকের মাঝে নিরাভরণা স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কীভাবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন!

মহাদেব তখন দেব কারিগর বিশ্বকর্মার কাছে গেলেন সাহায্য চাইতে। বিশ্বকর্মা জানিয়ে দিলেন, জগতে যত রত্ন ছিল, তার সমস্তটা দিয়েই দেবলোকের দেবীদের অলংকার তৈরী করা হয়েছে। এখন শুধু সমুদ্রগর্ভে শঙ্খ পড়ে রয়েছে। তবে বিশ্বকর্মা আশ্বস্ত করে জানালেন, এই শঙ্খ দিয়েই তিনি এমন অলঙ্কার প্রস্তুত করবেন, যা সমস্ত রত্ন অলংকারের শোভা খর্ব করে দেবে। সেই মতোই দেবী পার্বতীর জন্য তৈরি হলো শঙ্খের সাজ। শঙ্খ সাজে সুশোভিতা দেবীর সৌন্দর্য্যে দেবলোক আলোকিত হয়ে উঠলো। সেই থেকেই হিন্দু বিবাহিতা নারীর জীবনে শাঁখাই হয়ে উঠল প্রধান অলঙ্কার।

তবে শাঁখার কিন্তু বেশকিছু গুনাগুন আছে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, শাঁখা মাথা ঠান্ডা রাখে, সৌন্দর্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধেও এর বেশ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে। তাই, সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সুস্থ সবল দেহ পেতে এখনো শাঁখার প্রচলন আছে।