টিভি কিংবা মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এই পঞ্চায়েত

11
টিভি কিংবা মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এই পঞ্চায়েত

যত দিন যাচ্ছে মানুষ মোবাইলে আরো বেশী আসক্ত হয়ে পড়ছে। সারাদিন মোবাইল নিয়ে খুট খুট করে গোটা বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারলেও নিজের পরিবার নিয়ে অনেকেরই অনেক কিছু অজানাই থেকে যায়। পরিবারের সাথে সময় কাটানো প্রায় উঠেই গেছে এই করে।

আর তাই এই সমস্যার বিরুদ্ধে একটি অভিনব ব্যাবস্থা নিতে দেখা গেলো মহারাষ্ট্রের কোলাপুর জেলার মনগাঁও নামের একটি গ্রামে। সেখানে সন্ধে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টিভি কিংবা মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পঞ্চায়েত। আপাতত বিষয়টা ঐচ্ছিক হলে খুব শিগগিরি তা বাধ্যতামূলক করা হবে। না মানলে দিতে হবে জরিমানাও।

এই গ্রামটি একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। ১৯২০ সালের মার্চে এই গ্রামেই শুরু হয়েছিল অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলন, যার উদ্যোক্তা ছিলেন স্বয়ং আম্বেদকর। এছাড়াও বিধবা বিবাহ নিয়েও সরব হয়েছিল এই গ্রাম। কয়েক দশক পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিবাদী মনোভাব বা উন্নত চিন্তা ভাবনা মনগাঁওই প্রথম দেখতে পাওয়া গেলো। গত ২৬ জানুয়ারি পঞ্চায়েতের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কীভাবে নতুন প্রজন্মকে পরিবারের মধ্যে বা পড়াশোনার মধ্যে একটু আবদ্ধ রাখা যায় তাঁর চেষ্টাই তারা করতে চলেছে।

আগামী ৮ মার্চ, নারী দিবস। সেই দিনই এই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একটা নির্দিষ্ট সময়মতো ওই গ্রামে সাইরেন বাজানো হবে। তখনই বন্ধ করে দেওয়া হবে সমস্ত ফোনও টিভি। ওই সময়টায় বই পড়া কিংবা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে গল্প করারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের সরপঞ্চ রাজু ম্যাগডাম বলছেন, ”আমরা সকলেই সেলফোন ও টেলিভিশনে আসক্ত। যার ফলে মনঃসংযোগ নষ্ট হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা কমে আসছে। ফলে পরবর্তী সময়ে সৃষ্টি হচ্ছে পারিবারিক সমস্যা।”

এখন এটা নিজের ইচ্ছেমত শুরু করা হলেও পরবর্তীকালে এটিকে বাধ্যতামূলক করা হবে। এই নিয়ম ভাঙলে শাস্তিও পেতে হবে সেই পরিবারকে।
যদি ১৫ হাজার জনসংখ্যার ওই গ্রামের কোনও পরিবার পাঁচবার এই নিয়ম ভাঙে, তাহলে ষষ্ঠ বার থেকেই সেই পরিবারের উপরে সম্পত্তি করের হার বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বলা হয়েছে।

শুধু তাই নয় ওই গ্রামের কেবল অপারেটরদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই সময় সমস্ত সম্প্রচার বন্ধ রাখার জন্য। সব মিলিয়ে এক নয়া সূচনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে মহারাষ্ট্রের এই গ্রামটি। বাকি দেশও একদিন অনুসরণ করবে তাদের, এমন আশা করছে অনেকেই। এটা সত্যি একটি শিক্ষামূলক একটি বিষয়।