“দ্য জঙ্গল বুক” এর “মোগলি”কে কে না চেনেন। প্রত্যেকের ছোটবেলার সঙ্গেই মোগলি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মোগলির সেই বন্যজীবন, বন্য পশুদের প্রতি তার টান, ভালোবাসা, সখ্যতা শিশুমনকে বরাবর আকর্ষণ করে। প্রিয় মানুষদের চেনা গণ্ডি পেরিয়ে বন-জঙ্গলের সেই অসীম রহস্যের পানে ছুটে যেতে মন চায়। কিন্তু বাস্তব জীবনে মোগলির কি আদেও কোনো উপস্থিতি আছে?
অবশ্যই আছে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় থাকেন আমাদের সকলের পরিচিত সেই রূপকথার জগতের মোগলি। নাম তার এলি। তবে আমাদের মোগলি তার বাল্য অবস্থা থেকে বেরিয়ে কৈশোর পেরিয়ে এখন যৌবনে পা রেখেছে। বয়স এখন তার ২১ বছর। তবে এলির মোগলি হয়ে ওঠার কাহিনীটা কিছুটা অন্যরকম। ছোটবেলা থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত সে! এই রোগই এলিকে মোগলি বানিয়ে দিয়েছে।
এলি অন্যান্য সাধারণ যুবকের মত নয়। তার চেহারা, হাবভাব সাধারণ মানুষের থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। মানুষের মধ্যে নয়, বন জঙ্গলের মধ্যেই থাকতে পছন্দ করে সে। সভ্য সমাজের মধ্যে সে যেন বড়ই বেমানান। অনেকেই তাকে পছন্দ করেন না। ছোটরা তাকে “বাঁদর” বলে খেপায়। বড়রাও তার প্রতি সমবেদনশীল নন। বড়দের থেকে মারধোর খেতে হয় তাকে। একমাত্র মায়ের কাছেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এলি।
খাবার-দাবারের প্রতিও প্রচন্ড অনিহা রয়েছে এলির। রান্না করা খাবারের তুলনায় কাঁচা শাকসবজি, ফলমূল খেয়েই জীবন ধারণ করে সে। সারাদিন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে ঘাস, পাতা, ফলমূল বিশেষ করে কলা খেতে খুব ভালোবাসে সে। এলি তার মা-বাবার ষষ্ঠ সন্তান। আগের পাঁচ সন্তানের অস্বাভাবিক কারণে মৃত্যু হওয়াই অনেক সাধ্য সাধনা করে ভগবানের থেকে যেন আশীর্বাদস্বরূপ এলিকে পান তারা। কিন্তু সেই সন্তান আর পাঁচটা সাধারণ সন্তানের মত হলো না। বাস্তব দুনিয়ার মোগলি জনসমাজে রীতিমতো উপেক্ষিত। তাই বনের কোলেই থাকতে পছন্দ করে সে।