জন্ম থেকেই দুটি পা নেই তাঁর। অঙ্গহীন হয়ে জন্মালে সমাজ তাকে পঙ্গুই আখ্যা দেয়। শুধু মাত্র পঙ্গু বলেই মেয়েটি জন্মের পর থেকেই বাবা-মা -র ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। বাবা-মায়ের কোলে নয়, বরং তাঁর আশ্রয় হয়েছিল ফুটপাতে। তাঁর বাবা-মা মেয়ের জীবনের এই চরম সত্যিটা মেনে না নিতে পেরে জন্মের মাত্র এক সপ্তাহ পরেই তাকে বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। বাবা-মা থাকা সত্ত্বেও এরপর থেকে অনাথ হয়ে যায় মেয়েটি। মেয়েটির নাম কানিয়া সেসার। অনাথ আশ্রমই ছিল শিশু সেসারের একমাত্র ঠিকানা।
সেসারের জীবনের শুরুতে অনেকটা লড়াই ছিল ঠিকই, কিন্তু বাবা-মায়ের আদর থেকে সে কখনোই বঞ্চিত হয়নি। পেয়েছিল এক নতুন পিতা-মাতা। জিমি ও মা’রিয়ান সেসর নামের এক দম্পতি থাইল্যান্ডের অনাথ আশ্রম থেকে সেসরকে দত্তক নেন,যদিও তারা ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। পোর্টল্যান্ডে বড় হতে থাকেন সেসার। তবে কোনদিনই হুইল চেয়ারকে বেছে নেননি সেসার। বরং শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে জীবনে নতুন করে বাঁচতে শিখেছিলেন। বেছে নিয়েছিলেন পছন্দের স্কেট বোর্ড।
তবে ‘পঙ্গু’ এখন তার পরিচয় নয়। বিভিন্ন পোশাক কোম্পানির মডেল হিসেবে এখন রীতিমতো জনপ্রিয় কানিয়া সেসার। বর্তমানে যার মাসিক আয় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। এখন তার বয়স ২৩ বছর । সংবাদমাধ্যমের এক ইন্টারভিউতে কানিয়া বলেন, “নো লেগস, নো লিমিটস।” তাঁর যেহেতু পা নেই তাই কোনো বাধাও নেই।
তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই অ্যাথলেটিক্সের প্রতি ভীষণ ঝোঁক ছিল, পরে ধীরে ধীরে ফটোশ্যুট এবং লিঙ্গেরির মডেলিং শুরু করি।” এই মডেল স্বপ্ন দেখেন একদিন তিনি প্যারা অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় মোনো স্কি বিভাগে প্রতিদ্বন্দিতায় নামবেন। তাঁর মতে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য তো কম লড়াই করতে হয়নি, তবে তাঁর এই অন্ধকার জীবনে আলোর মুখ দেখার একমাত্র কারণ হল তাঁর তীব্র ইচ্ছা শক্তি এবং তাঁর বাবা মা। সেইজন্যই আজ হয়তো এতটা এগিয়ে আসতে পেরেছেন। তাঁর জীবনের এই চরম প্রতিবন্ধকতা কখনোই তাঁকে হারতে দেয়নি বরং জীবন টাকে অনেক টা সামনের দিকে এগিয়ে দিয়েছে।
"You are imperfect, permanently and inevitably flawed. And you are beautiful! " 🤍 Be #cupsheconfidence
.
Photographer 📸: @jeffantonsphotography #nolegsnimits #happinessloveyourself pic.twitter.com/8EZP3EmCkJ— Kanya Sesser (@kanya_sesser) June 18, 2021