আমাদের পরিচিত বা নিজেদের আত্মীয়দের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা ট্যারা। চলুন আজকে ট্যারা চোখ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা জেনে নেওয়া যাক। ধরুন আপনার বাড়িতে বা পরিচিতদের মধ্যে কারোর সন্তান জন্ম নেওয়ার পর দেখা গেল যে বাচ্চাটি ট্যারা। তাহলে প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হল বাচ্চাটি যখন বড় হবে তখন আপনি লক্ষ্য রাখুন যে বাচ্চাটি দেখতে ঠিকঠাক পাচ্ছে কিনা। সেই জন্য বাচ্চাটি টিভি যখন দেখবে তখন টিভি থেকে কুড়ি মিটার দূরত্ব বজায় রাখুক। দেখুন টিভির স্ক্রীনের নিচে আসা ছোট ছোট লেখাগুলো সে ঠিকমতো পড়তে পারছে কিনা।যদি সে ঠিকঠাকমতো চোখে দেখতে না পায় তবে কোনো চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে বাচ্চাটিকে নিয়ে যান। ডাক্তার দেখে বুঝবেন বাচ্চাটি ঠিকমত চোখে দেখতে পায় কিনা তাহলে তিনি একটি চশমা ব্যবহার করতে দেবেন।
যদি ডাক্তার দেখেন যে দুটো চোখের মধ্যে একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো আছে এবং অপরটিতে দৃষ্টিশক্তি কম আছে তবে যে চোখটির দৃষ্টিশক্তি ভালো আছে সেই চোখটিকে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা বন্ধ করে রেখে দেন। এটিকে বলা হয় অকলুশন। প্রথমটা কে বলা হয় অপটিক্যাল, দ্বিতীয়টা অকলুশন। অকলুশানেও যখন কাজ না হয় তখন আর একটা অর্থোপেডিক্স করানো হয়। চোখের ব্যায়ামটি হল ডান দিকে, বাম দিকে, উপরে এবং নিচে ঘুরতে বলা হয়। স্নায়ুকে সতেজ রাখার জন্য এটি করতে বলা হয়।
এগুলির কোনোটিতেই যখন কাজ না হয় তখন অস্ত্রোপচার করা হয়। পেশি দুর্বল হয়ে গেলে স্ট্রেংন্দেনিং করে দেওয়া হয়। চোখের পাশে কেটে সেলাই করে ঠিক করা হয়, যদি পাশে বেঁকে যায় তবে তার জায়গাটা বদল করে ইনসারশনটা করে দুটো চোখকে সমান করা হয়। এই অপারেশনটি বয়সের যে কোন সময় করা যায় তবে শিশুর জন্মের পর পাঁচ বছরের মধ্যে করলেই ভালো হয়।
তবে চশমা পড়ার ক্ষেত্রেও অনেক বাধা আছে যেমন চশমা ব্যবহার করলে সেনাবাহিনীর কোনো দপ্তরে চাকরি পাওয়া যায় না।অনেকেই এমন আছেন যারা চশমা পরতে পছন্দ করেন না। চশমা পড়তে ভালো না লাগলে তারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন। আর কন্ট্যাক্ট লেন্স যারা ব্যবহার করতে ভালোবাসেন না তারা লেজারের মাধ্যমে লেসিক করতে পারেন।
পরিশেষে বলতে পারি কুসংস্কার থেকে দূরে থাকুন। কারোর শিশুর যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নিন। চোখের জন্য আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই আমাদের দেশেই এই চিকিৎসা ভালোভাবে হয় যার থেকে আপনার শিশু সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যেতে পারবে।