প্রতিটা মেয়ের কাছে স্বপ্ন থাকে যে মনের মানুষকে নিয়ে সংসার করার। আর বিয়ের আগে মেয়েদের কাছে চিন্তা থাকে নতুন সংসারে গিয়ে সেই আতেও সেখানে মানিয়ে নিতে পারবে কিনা। অনেকে আবার বিয়ের পরে মানিয়ে নেয়ার ভয় স্বামীকে নিয়ে শশুর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে সংসার পাতে। কিন্তু এই জিনিসটা করা ভুল। কারণ বিয়ের পরে মেয়েদের কাছে সব থেকে প্রিয় মানুষ হলো তার স্বামী।
আর এই প্রিয় মানুষটির পরিবারের কে ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে সংসার পাতা হল স্বার্থপরের মত কাজ। যদি সেই প্রিয় মানুষটির সঙ্গে তার পুরো পরিবারকে মানিয়ে নিয়ে সংসার করা যায় তাহলে সেই কাজটি হলো সবথেকে বড় মনুষ্যত্বের কাজ। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কিভাবে নতুন সংসারে গিয়ে আপনি সেই পুরো সংসারের সদস্যদের কিভাবে মানিয়ে নেবেন তার পদ্ধতি।
ইগো পরিহার করুন– সংসারে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার পেছনে যে জিনিসটি থাকে তা হল ইগো। কথাটি বলে সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে। আর সংসারকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে হলে ইগো পরিত্যাগ করুন। সর্বদা নম্র থাকুন।
নতুন পরিবারকে নিজের করে নিন– নতুন পরিবারে যখন আপনি আসবেন সেই পরিবারটিকে নিজের করে নিন। সেই পরিবারটিকে কখনই ভাববেন না যে ওই পরিবারটি আপনার নয় আপনি হঠাৎ করে সেখানে এসে পড়েছেন।যদি ভাবেন ওই পরিবারটি আপনার নিজের তাহলে দেখবেন সবকিছু সমস্যারই সমাধান হয়ে গেছে।
তুলনা কখনোই করবেন না– বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কোনদিনও শ্বশুরবাড়ি আর বাপের বাড়ি কে তুলনা করবেন না। দুটো বাড়ির দুটো পরিবেশ আলাদা। এমন হতেই পারি যে যে জিনিসটি আপনি বাপের বাড়িতে পাননি সেটি আপনি শ্বশুরবাড়িতে পেয়েছেন তাহলে কখনোই আপনি বলবেন না যে এই জিনিসটি আপনি বাপের বাড়িতে পাননি তাহলে বাপের বাড়ি খারাপ। বরং পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিন।
পরিবারের কাজে সাহায্য করুন– আপনি যখন কোনো পরিবারে যাবেন দেখবেন সেই পরিবারের পুরো রান্নার দায়িত্ব কেউই আপনার হাতে ছাড়বে না। তাই রান্নার কাজে ছোট ছোট বিষয়ে আপনি তাদের সাহায্য করুন। তবে কাজটি করার আগে আপনি অবশ্যই আপনার শাশুড়ি ননদ কে জিজ্ঞাসা করে নিন। জিজ্ঞাসা করে কাজ করা কোন ছোট হওয়া নয় কারণ প্রতিটি বাড়িতেই কাজের ধরন অন্য অন্য হয়ে থাকে।
পরিবারটিকে জানার চেষ্টা করুন– নতুন পরিবার একই পরিবারের বয়স্ক কোনো ব্যক্তি বা স্বামীর কাছ থেকে পরিবারের আত্মীয়-স্বজনদের সম্বন্ধে জানুন তাদের সঙ্গে নিজে থেকে আলাপ করুন। পরিবারের নতুন সদস্য যাওয়ার পরে অনেকেই সেই সদস্যকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে থাকে প্রথমেই সেটিকে নেগেটিভ ভাবে নেবেন না। যদি এমন পরিবেশ তৈরী হয় যেটি আপনার পছন্দ হচ্ছেনা তাহলে প্রথমেই রিয়াক্ট করবেন না।
সঙ্গী্র প্রশংসা করা– আপনার সঙ্গীটি কেমন তা অনেক আগে থেকেই তাঁর পরিবার জানে। তাই সেই মানুষটির দোষ ত্রুটিগুলি তার পরিবারের কাছে প্রথমেই তুলে ধরতে যাবেন না তাহলে সেটা খারাপ পর্যায়ে যাবে। তাই দোষ ত্রুটি তুলে না ধরে সেই মানুষটির প্রশংসা তার পরিবারের কাছে করুন।
নিয়মিত যোগাযোগ রাখা– আপনি যদি আপনার শ্বশুর শাশুড়ি বা ননদের থেকে আলাদা থাকেন তা হলেও তাদের সাথে প্রতিদিন ফোনে কথা বলুন পুরো দিনটি তারা কিভাবে কাটালেন আপনি কি কি করলেন সেই গুলো তাদের সাথে শেয়ার করুন দেখুন আপনাদের সম্পর্ক অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
সরাসরি কথা বলা– শ্বশুরবাড়িতেযদি কখনো কোনো আত্মীয় আপনাকে ভুল বোঝেন তাহলে সেই ব্যাপারটিকে মেটানোর জন্য আপনার বাপের বাড়ির পরিবারের কাউকে ডেকে আনবেন না তাহলে সেটা আপনার সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বরং আপনি আপনার শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন দেখুন ঝামেলা পুরোটাই মিটে যাবে।
পরিশেষে বলি প্রথমেই প্রতিটা মেরি অন্য পরিবারে গিয়ে মানাতে একটু সময় লাগে।ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলুন দেখুন সংসারে শান্তি আসবেই। আরে শান্তিকে পাবার জন্য নতুন পরিবারের সদস্যকে আপন করে নিন।