২০২২কে বিদায় জানিয়ে ২০২৩কে সবাই স্বাগত জানিয়েছে। এমন অনেক মানুষ আছে যারা নতুন বছর এলেই নতুন রেজোলিউশন বা শপথ গ্রহণ করেন। শপথ নেয়ার সময় কেউ এটা মনে রাখেন না যে শপথ নিলে সেটা বেশি দিন বজায় রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু এই নতুন বছরের রেজোলিউশন প্রথা কীভাবে আবিষ্কৃত হল সে সম্পর্কে একটু ধারনা নেওয়া যাক । ১৫৩ খ্রিস্টপূর্বে রোমান সেনেট দ্বারা ঘোষিত হয় পয়লা জানুয়ারি দিনটি ইংরেজি বছরের প্রথম দিন। এই ঘটনার ১০০ বছর পরে অর্থাৎ ৪৪ খ্রিস্টপূর্বে রোমের সম্রাট জুলিয়াস সিজার এই ঘোষণার উপর সিলমোহর চাপিয়ে দেন।
এবার আসা যাক শপথ নেয়ার ব্যাপারটিতে। পয়লা জানুয়ারি দিনটিকে বছরের প্রথম দিন হিসেবে গণ্য করার ঘটনার থেকেও বহু পুরাতন হল নতুন বছরে নতুন শপথ গ্রহণ করার ব্যাপারটি। আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে ব্যবিলনে এই প্রথা সর্বপ্রথম চালু হয়। তবে তখন এই রকম করে নতুন বছর পালন করা হত না।
আকিতু নামে এক উৎসবের মাধ্যমে তখনকার ব্যাবিলনের মানুষ বিশেষ বিশেষ কারণের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করতেন। তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে ভগবানের কাছে যদি কোনও শপথ করে সেটা পূর্ণ করা যায় তা হলে তাতে তাঁদেরই লাভ হয়। এখন রেজোলিউশন বা নিজের কাছে শপথ করতে হয় আমি ভালো কাজ করব, সৎ পথে চলবো ব্যাপারটা অনেকটা সে রকমই। পাশাপাশি ব্যাবিলনের মানুষ বিশ্বাস করতেন যে বছরের প্রথম দিনে কোনো ধার রাখতে নেই।বছর শুরু হওয়ার আগেই সমস্ত ধার পরিশোধ করে নিতে হয়।
পয়লা জানুয়ারি আমাদের কাছে যেমন বছরের প্রথম দিন ব্যাবিলনে সিজারের সময় সেটা ১২ দিন ধরে পালিত হত। সিজারের সময় ব্যাবিলনের মানুষজন ঈশ্বরের কাছে শপথ করতেন। এটি ছিল তাদের কাছে প্রথা।মধ্যযুগে যোদ্ধারা নতুন বছরে নিজেদের কাজে প্রতি বীরত্ব দেখানোর কথাই শপথ নিতেন। পরিশেষে বলতে পারি বর্তমান সময়ে আমাদের সবাইকে শপথ নিজের কাছেই নিতে হয় কি সপথ বা রেজুলেশন মূলত খ্রিস্টধর্মেরই প্রথা। কিন্তু জর্জিয়ান ক্যালেন্ডারের মত অবলম্বন করে বছরের প্রথম দিনে এই শপথ নেওয়া বা রেজুলেশন করা আজ সমস্ত ধর্মের বেড়া ভেঙে দিয়ে, কালের গণ্ডিকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছে সার্বজনীন।