সতীন মাত্রই হিংসা, ঝগড়া, কলহ, বিবাদ আরও কত কি! কিন্তু আজ যে দুজন সতীনের কথা আজ আপনাদের বলব তা বেশ এক অন্যরকমের কাহিনি। শুনে আপনিও ভাবতে পারেন এমনটাও হয়। তাঁদের দেখলেই মনে হবে ‘সোল সিস্টার্স’। সোশ্যাল মিডিয়ায় এরা দুজন দারুণ অ্যাক্টিভ। আর সেই কারণে এদের ফলোয়ার সংখ্যাও প্রায় কয়েক লক্ষ। এ তো যে সে ব্যাপার নয়। একই রকম সাজ-পোশাকে তাঁরা মাঝেমধ্যেই ধরা দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। দুজনের নাম পায়েল মালিক ও কৃতিকা মালিক। এদের জনপ্রিয়তা মূলত টিকটকের সময় থেকে। কিন্তু ভারতে টিকটক ব্যান হওয়ায় এখন এদের রিল বানাতে দেখা যায় ইনস্টাগ্রামে। ইনস্টাগ্রামে পায়েল-কৃতিকা-আরমান এর ভিডিওর অনেক ফ্যানও রয়েছে, যারা রীতিমতো অপেক্ষা করে থাকেন তাদের রিলের জন্য। হ্যাঁ, পায়েল ও কৃতিকা দুজনেরই স্বামী আরমান মালিক। ইনস্টার পাশাপাশি ইউটিউবেও সুপারহিট এই পরিবার, তাঁদের চ্যানেলের নাম ফ্যামিলি ফিটনেস।
ইনস্টাগ্রামে পায়েলকে ফলো করেন ১৯ লক্ষ নেটিজেন এবং কৃতিকার ফলোয়ার সংখ্যা ৩৭ লক্ষ। পায়েল-কৃতিকা তাদের জীবনের যাবতীয় খুশির মুহুর্ত গুলো হাসিমুখে লেন্সবন্দি করে শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা সে একসঙ্গে করওয়া চৌথ পালন করাই হোক বা একসঙ্গে জুটি বেঁধে ছুটি কাটানো কিংবা শপিং হোক, কোনো কিছু ই বাদ দেননা তারা। ইনস্টাগ্রামে অনেকেই তাঁদের এহেন কার্যকলাপের ভিডিও দেখে রীতিমতো কনফিউজড হয়ে যান তাঁরা বেস্ট ফ্রেন্ড না সতীন?
দুই স্ত্রীকে নিয়ে এক ছাদের তলাতেই থাকেন আরমান। তবে শুরু থেকেই এত সহজ ছিল না তিনজনের সম্পর্ক। আরমানের আসল নাম সন্দীপ, হরিয়ানায় তাঁর আসল বাড়ি। সন্দীপের প্রথম স্ত্রী পায়েল। ২০১১ সালে দুজনের বিয়ে হয়। এরপর ২০১৮ সালে কৃতিকার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সন্দীপ। আরমান ও তাঁর প্রথম স্ত্রী পায়েলের এক পুত্র সন্তান রয়েছ চিরাউ মালিক। আসলে চিরাউ-এর জন্মদিনের পার্টিতে পরিচয় হয় সন্দীপ ও কৃতিকার। কৃতিকা ছিলেন পায়েলের বান্ধবী। প্রথম দেখাতেই কৃতিকার প্রেমে পড়েন সন্দীপ এবং দেরী না করে ৬ দিনের মধ্যে পায়েলের সম্মতি এবং উপস্থিতিতেই বিয়ে হয় সন্দীপ-কৃতিকার। এ প্রসঙ্গে কৃতিকা বলেছেন, ‘সন্দীপ আমাদের দুজনকেই ভালোবাসে, তাই আমরা বিয়ে করে নিয়েছি’।
পায়েলের পরিবারের এই বিয়েতে কোনোভাবেই মত ছিল না। বাপের বাড়ির লোকজনের নানারকম কথায় পায়েল একটা সময় সম্পর্ক ভাঙতেও চেয়েছিল। সেই কারণে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লির এক ছয় তলা বিল্ডিং-এ উঠে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন সন্দীপ ওরফে আরমান। ২০ ঘন্টা ধরে এসব চলার পর দিল্লি পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়।
কিন্তু হিন্দু ধর্ম মতে দুই বিয়ে একসাথে মান্যতা পায় না। তাই পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সন্দীপ ও তাঁর পরিবার। এখন সব ঝগড়াঝাঁটি, অশান্তি ভুলে দুই সতীন সুখে শান্তিতে সংসার করছেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় এসবের কারণে কৃতিকা-পায়েল-আরমানকে অনেক সমালোচিত হতে হয়েছে।