কেমন কেটেছিল ছোটবেলা? বলতে বলতেই কেঁদে ফেললেন কমেডি কুইন ভারতী সিং

11
কেমন কেটেছিল ছোটবেলা? বলতে বলতেই কেঁদে ফেললেন কমেডি কুইন ভারতী সিং

প্রতিটা মানুষকে সামনে থেকে দেখলে মনে হয় কত খুশি কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যার জীবনে কখনো কষ্ট আসেনি। আজকের প্রতিবেদনে এমন একজনকে নিয়ে কথা বলবো যাকে এই দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন। তিনি হলেন বিখ্যাত কমেডি কুইন ভারতী সিং। তাঁকে সর্বদা হাসতে দেখা যায় ও হাসাতে দেখা যায়। তার কথার জাদুতে হাসতে বাধ্য হন আট থেকে আশি। কিন্তু এই ভারতীর অতীত জীবন মোটেই এত বিলাসবহুল ছিল না। এনার মনের অজানা গল্প শুনলে যে কেউ অবাক হবেন যে এই মেয়েটির জীবনে এতটা কষ্ট গেছে।

সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার সাথে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীর মুখেই উঠে এসেছে তার পুরনো জীবনের অজানা কাহিনী। বরাবরই স্পষ্ট বক্তা হিসেবেই পরিচিত এই কমেডি কুইন। তাই মনের কথাই মুখে থাকে তাঁর। প্রসঙ্গত বিরাট সাফল্যের জোরে আজ তিনি বিলাসবহুল জীবন কাটালেও একসময় তাঁর ছোটবেলাটা কেটেছে অনেক কষ্ট এবং দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে। দারিদ্রতা যে কি কষ্টের তা তিনি তার ছোটো বেলায় হারে হারে উপলব্ধি করেছেন।

তবে অতীতের সেই দারিদ্রতা নিয়ে কখনোই কোন আড়াল রাখেননি এই কৌতুক অভিনেত্রী। বরং অতীত জীবন নিয়ে বরাবরই গর্ববোধ করেন তিনি। যা শুনলে চোখে জল চলে আসবে যা কারও। ভারতী জানান মাত্র ২ বছর বয়সে তিনি তাঁর বাবাকে হারিয়েছেন। সে সময় অভাবের সংসার চালাতে লোকের বাড়ি কাজ করতেন তাঁর মা। লোকের বাড়ির ফেলে দেওয়া বেঁচে যাওয়া খাবার খেয়েই বড়ো হয়েছেন তিনি ও তার ভাই বোনেরা। এতটাই অর্থাভাব ছিল যে সেসময় অর্থেই অভাবে তাঁদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভাইবোনরা সবাই ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। দিওয়ালিতে অন্য বাচ্চারা যখন বাজি ফাটাতো তখন সেদিনের ছোট্ট ভারতী নাকি তাদের কাছে গিয়ে এই আশায় দাঁড়িয়ে থাকতেন যে তিনিও কখনও বাজি ফাটাবেন।

কমেডিয়ানের কথায় ‘আমার মা যখন লোকের বাড়িতে কাজ করত আমি দরজায় বসে থাকতাম। বাথরুম পরিষ্কার করত মা। ফেলে দেওয়া,বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে আসতো মা যে বাড়িতে কাজ করতো সেখান থেকে। ওদের কাছে খারাপ খাবারটা আমাদের কাছে অমৃত হয়ে উঠতো’। তাই ভারতী যখনই কাউকে খাবার নষ্ট করতে দেখেন কিংবা রাস্তাঘাটে কোন আধ খাওয়া আপেল পরে থাকতে দেখেন তখন তা দেখে প্রচন্ড রাগ হয় তাঁর। মনে মনে বলেন যিনি ওই খাবার টা নষ্ট করলেন তার খারাপ হোক। এতটাই কষ্টে মানুষ হয়েছেন তিনি ও তাঁর ফ্যামিলি।

বহু কষ্ট করে আজ তার এত নাম যশ। আজ বাড়ি গাড়ি সবই আছে তার। কিন্তু অতীত সে ভোলেনি তাই আজও খাবার সে নষ্ট করতে একেবারেই পছন্দ করে না। তিনি ছোটবেলাতেই এতটাই দারিদ্র দেখেছেন যে, সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন কমেডিয়ান ভারতি বলেন ‘আমি জীবনে কতটা দারিদ্র দেখেছি তা বলে বোঝাতে পারবো না’। ভারতীর কথায় ‘ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করলে বোঝা যাবে বেশিরভাগ কৌতুকশিল্পীই কিন্তু একসময় গরিব ছিলেন। ভরা পেটে হয়তো রসিকতা করা যায় না’।