কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝেই কাজের চাপ থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে এবং নতুন উদ্যমে পুনরায় কাজ শুরু করার আগে “টনিক” হিসেবে চায়ের কাপে চুমুক দিতে বরাবরই একটু বেশিই আকর্ষন বোধ করেন মানুষ। কিন্তু বাইরে থাকাকালীন চা পানের ইচ্ছে থাকলে নিকটস্থ চায়ের দোকানে অথবা অফিস কাছারিতে অটোমেটিক চা অথবা কফি তৈরীর মেশিন থেকে পান করতে হয়। আগেকার যুগে তবুও মাটির ভাঁড়ে চা পানের ব্যবস্থা ছিল। এখন সেই ব্যবস্থা বদলে ভাঁড়ের জায়গায় এসেছে প্লাস্টিক অথবা কাগজের কাপ।
কিন্তু এই প্লাস্টিক অথবা কাগজের কাপে গরম পানীয় পান করা শরীরের পক্ষে কতটা নিরাপদ? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? সম্প্রতি, খড়্গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকেরা যে তথ্য দিলেন, চা প্রেমীদের জন্যে তা সত্যিই বেশ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খড়গপুর আইআইটির জানাচ্ছেন, চা পানের জন্য বানানো কাগজের কাপ থেকে মারাত্মক বিষ ঢুকছে মানব শরীরে। যা শরীরে মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি করার পক্ষে যথেষ্ট।
গবেষকেরা যে তথ্য দিয়েছেন তা থেকে জানা গেল, এই ধরনের ডিসপোজেবল কাগজের কাপে এক ধরনের মারাত্মক রাসায়নিকের প্রলেপ দেওয়া থাকে। প্লাস্টিক বা পলিথিন দ্বারা নির্মিত হাইড্রোফোবিক ফিল্মের পাতলা আবরণ যা কাগজের কাপের গায়ে লাগানো থাকে, তা আসলে গরম পানীয়ের দরুন কাগজ ভিজে যাওয়ার হাত থেকে কাপগুলিকে রক্ষা করে। তবে গরম পানীয় যখন এইসকল কাপে ঢালা হয় তখন সেই প্লাস্টিকের তৈরি আবরণ গলে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কাপে গরম জিনিস ঢালার ১৫ মিনিটের মধ্যেই প্লাস্টিকের স্তর গলে ছোট ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক উপাদানে ভেঙে যায়। গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী ১০০ মিলিলিটারের পাত্রে যদি গরম তরল ঢালা হয় সে ক্ষেত্রে প্রায় ২৫ হাজার মাইক্রো প্লাস্টিক পানীয় তরলের সঙ্গেই মিশে যায়। অর্থাৎ প্রতিবার চা-পানের ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণে রাসায়নিক মানব শরীরে প্রবেশ করে। তাই চা পানের সময় এই কাগজের কাপ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। নতুবা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।