সংসার চালাতে ১০০ দিনের কাজের আবেদন করলেন ৩৭ বছরের এম এ পাশ করা গীতশ্রী মান্না

110
সংসার চালাতে ১০০ দিনের কাজের আবেদন করলেন ৩৭ বছরের এম এ পাশ করা গীতশ্রী মান্না

২০০৭ সাল থেকে তিনি দিচ্ছেন বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা। মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অসাধারণ নম্বর পেয়ে চাকরির খোঁজে এখনো হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ন্যাজাটের বাসিন্দা ৩৭ বছরের গীতশ্রী মান্না। বহুবার চাকরির খোঁজ করেও চাকরি না পাওয়ায় অবশেষে এখন হাঁস মুরগি প্রতিপালন করে এবং মেশিনে সেলাই করে সংসার প্রতিপালন করেন গীতশ্রী মান্না। কিন্তু বয়স বেড়ে গেলেও এখনও স্বপ্ন দেখেন তিনি। বয়সের কারণে বেশ কিছু সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসতেই না পারলেও কিছুদিন আগে ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট সুপারভাইজার পদের জন্য পরীক্ষা দেন গীতশ্রী।

এই প্রসঙ্গে গীতশ্রী জানান, বাবা পেশায় স্কুল শিক্ষক। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করি এবং ছাত্রপতি শাহুজি মহারাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল নিয়ে এমএ পাস করি। তারপর থেকেই চাকরির পরীক্ষা দেওয়া শুরু করি। কলকাতার এক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই ২০১০ সালে। বর্তমানে স্বামীর কাজ চলে যাওয়ায় সংসার চালানোর দায় হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো জানান, সংসার চালানোর জন্য আপাতত হাঁস-মুরগির ডিম বিক্রি করে এবং সেলাই মেশিনে কাজ করতে হচ্ছে আমায়। অর্থ উপার্জনের জন্য ১০০ দিনের কাজের জন্য জব কার্ডের আবেদন করা হয়েছে। এত পড়াশোনা করে শেষ পর্যন্ত এই কাজ করতে হচ্ছে আমাকে। কিন্তু লজ্জা করলে তো চলবে না। তাই জব কার্ড হয়ে গেলে দুজনেই মাটিকাটার কাজ শুরু করে দেব”।

এই ঘটনা আরো একবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বেকারত্বকে দেখিয়ে দেয়। আরো একবার দেখিয়ে দেয় পড়াশোনা করে এরকম বহু ছাত্র-ছাত্রী পেটের দায়ে সামান্য কাজ করে দিন গুজরান করছেন। এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি যদি কিছুটা সতর্ক হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাহলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বেকারত্বের সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।