আজকাল অনেকেই অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া বা ওবেসিটির মতো সমস্যায় ভুগছেন। অফিসে দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বসে বসে কাজ করার ফলে মানুষের কায়িক পরিশ্রম যেমন কমেছে, তেমনই ঘরের সাধারণ খাদ্যের তুলনায় বাইরের ফাস্টফুডের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ার ফলে দিন প্রতি দিন মোটা হয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। অনেকে আবার অতিরিক্ত কাজের চাপে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারনেও মোটা হয়ে যান। কারো কারো ক্ষেত্রে এই ওবেসিটি আবার হরমোনাল ইমব্যালেন্সের ফলাফল।
তবে কারণ যাই হোক না কেন, ওবেসিটি কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। সম্প্রতি ওবিসিটি সঙ্গে রোগের সম্পর্ক নিয়ে একদল গবেষক তাদের গবেষণার রিপোর্ট পেশ করেছেন। “ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল” এ প্রকাশিত ওই রিপোর্ট থেকে জানা গেল, শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে দেহে বিভিন্ন মারন রোগ বাসা বাঁধে। ফলে, মারন রোগের প্রভাবে অকাল মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটছে বেশি।
কোনো ব্যক্তির ওজনকে উচ্চতার বর্গফল দিয়ে ভাগ করা বলে সেই ভাগফলকে বলা হয় ব্যক্তির বিএমআই। গবেষণার রিপোর্টে গবেষকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যে সকল ব্যক্তি বিএমআই ২৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে বা তার থেকেও বেশি, তারাই বিভিন্ন মারণ রোগের শিকার হন। শুধু তাই নয়, এদের ক্ষেত্রে অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনাও অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি। শরীরের ওজন অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গেলে, বা শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে সেই ব্যক্তি হৃদযন্ত্র, কিডনি, স্নায়ু-সহ একাধিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন।
এই রিপোর্ট পেশ করার আগে বিভিন্ন বয়সের প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষের উপর সমীক্ষা চালান বিজ্ঞানীরা। এই সমীক্ষা সংক্রান্ত ৭২টি গবেষণাপত্রের সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মোটা ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণের তুলনায় অনেকাংশে কম। কারণ তারা আগে থেকেই ডায়াবেটিস, কিডনি, হার্ট, ফুসফুস এবং উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগতে থাকেন। এর উপর অন্য কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে সেই ব্যক্তির অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।