আমাদের ভারতীয় সেনাদের মধ্যে আমরা সব সময়ই ডিসিপ্লিন বজায় রাখতে দেখে থাকি। তারা যাই করুক না কেনো সীমান্তে তাদের নজরদারি সব সময় কড়া থাকে। তাদের জীবনটা এতটাই কঠিন অনুশাসনের মধ্যে আবদ্ধ যে তাদের সখ সাধ সব বিসর্জন দিয়েই তাদের এই কাজ বেছে নিতে হয়েছে। ওই সীমান্তের বর্ডারই তাদের জীবনের সব।
তাই তো এবার বহু সময় পর দেখা গেলো পূর্ব লাদাখের সীমান্ত এলাকায় ক্রিকেটে মাতল ভারতীয় সেনারা। গালওয়ানের কাছে ক্রিকেট ম্যাচটি হয় বলে খবর। সবসময় সীমান্তে কড়া নজর তাঁদের। দেশরক্ষার দায়িত্ব পালনের মধ্যে ক্রিকেটে মেতে উঠতে দেখা গেল ভারতীয় সেনাকে। সূত্রের খবর, ক্রিকেট ম্যাচের স্থানটি এমন একটি জায়গায় হয়েছিল, যেখানে ২০২০ সালে চিনা আগ্রাসন রুখে দিয়েছিলেন ভারতীয় জওয়ানরা।
সেখানের প্রায় জিরো ডিগ্রি তাপমাত্রায় ক্রিকেটে মেতে ওঠে সেনারা যা শুনেই সকলে হতবাক হয়ে যাচ্ছে। আর এই চিত্রটি ধরা পড়েছে একটি উপগ্রহ থেকে পাওয়া চিত্রে। যেখানে জওয়ানদের ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠতে দেখা গেছে। তবে, ম্যাচটি ঠিক কবে হয়েছিল, তা কিন্তু জানা যায়নি।
তবে আন্দাজ করা যাচ্ছে কয়েকদিন আগে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। সেই সময় লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় জওয়ানদের ক্রিকেট খেলাটি হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাতিয়ালা ব্রিগেড ম্যাচটির আয়োজন করেছিল। আর যেখানে আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সময় সেখানকার তাপমাত্রা ছিল জিরো ডিগ্রি। ম্যাচের স্থানটি থেকে গালওয়ান ৫ কিলোমিটারের মধ্যে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এটি সেই জায়গা যেখানে ২০২০ সালের ১৫ জুন লাদাখে গালওয়ানে চিনা আগ্রাসনের ঘটনা ঘটে। লাল ফৌজের আগ্রাসনে বাধা দেয় ভারতীয় সেনা। এর পর থেকে অনেক যুদ্ধ হয় দুই পক্ষেরই অনেক সেনা মারা যায়। এবং এই ঘটনার পর সীমান্তে ভারত-চিন সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। লাল ফৌজের আগ্রাসন রুখতে লাদাখে নজরদারি বৃদ্ধি করে ভারতীয় সেনা।
পরে অবশ্য অশান্তি মেটাতে দুই দেশের সেনা পর্যায়ে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দুই দেশের সেনা ঐক্যে পৌঁছালেও, এখনও বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধান এখনও মেলেনি। শুধু লাদাখ নয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে অরুণাচল প্রদেশে তাওয়াংয়ে চিনা সেনার আগ্রাসনের ঘটনা ঘটে সেখানেও ভারতীয় সেনারা ওদের রুখে দেয়। শুধু তাই নয় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন যে, সীমান্ত সমস্যাই এই দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যতদিন না সীমান্ত সমস্যা মিটবে চীনের সাথে সম্পর্ক কখনোই ভালো হবে না ভারতের সাথে।